10 টি দই খাওয়ার উপকারিতা | Healthy দই বানানোর সহজ উপায়
দই খাওয়ার উপকারিতা কী ? দই বানানোর সহজ উপায় কি ? এই সব কিছু নিয়েই আজকের এই নিবেদন। দই আমাদের সবার একটি প্রিয় খাবার।মানুষ ৪৫০০ বছর আগে থেকে দই (curd) তৈরি করে আসছে। দই এর উপকারিতা অপরিসীম দই একটি দুগ্ধজাতীয় পুষ্টিকর খাবার । দুধের ভিতরে ব্যাক্টেরীয় গাঁজনের ফলে দই তৈরি হয়। দুধের ল্যাক্টোজের গাঁজানের মাধ্যমে ল্যাক্টিক অ্যাসিড তৈরি হয় যা দুধ কে দই রুপান্তরিত করে এবং অন্যরকম স্বাদ ও গন্ধ তৈরি করে ।দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অজনা কিছু তথ্য নিচে দেওয়া হলো ।
দই খাওয়ার উপকারিতা গুলো
💡 মজবুত হাড়ঃ
দইয়ে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন “ডি” রয়েছে । এ দুটি উপাদানই হাড়ের জন্য খুবই প্রয়জনীয় এবং নিয়মিত দই খেলে হাড় মজবুত হয়।
💡 হজম শক্তি বাড়ায়ঃ
দই খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে অন্যতম এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। সারাদিনে আমরা নানা রকমের তৈলাক্ত জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি । অনেক সময় আমাদের শরীর তা ঠিক মত হজম করতে পারে না । তার ফলে পেটের নানা অসুবিধা দেখা দেয়। দই আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে যার ফলে শরীরের পরিপাক শক্তি বাড়িয়ে তুলে এবং পেটের সমস্যা দূর হয়ে যায়। খাবার খাওয়ার পর দই খেলে খাবার তারাতারি পরিপাক হতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ খেজুরের দারুন সব উপকারিতা , খেজুরের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কী বৃদ্ধি পায়।
💡 উচ্চ রক্তচাপঃ
দই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম যা উচ্চরক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। দই খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে তাই এটিও গ্রুরুত্বপূর্ণ।
💡 দাঁত মজবুতঃ
দই খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে অন্যতম এটি আমাদের দাতের খেয়াল রাখে। ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় ও দাঁতের প্রধান উপাদান। বিশেষ করে মহিলাদের শরীরে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত জরুরী। দই এ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা আমাদের হাড়ের জন্য উপকারী। নিয়মিত অল্প করে দই খেলে আমাদের দাঁত ও হাড় দুই টাই মজবুত থাকবে ।
💡 পাকস্থলীর সমস্যা সমাধানঃ
পাকস্থলীর না না রকম সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ল্যাকটোজের প্রতি সংবেদনশীলতা, ডায়রিয়া, কোষ্টকাঠিন্য, কোলন ক্যান্সার ও অন্ত্রের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে থাকে।
💡 ডায়বেটিসঃ
দই খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে এটিও একটি অন্যতম । ডায়বেটিস ও হার্টের রোগীদের ঠিক মত টক দই খাওয়ালে এ অসুখ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন।
💡 ত্বকের সমস্যা সমাধানঃ
দইয়ের ল্যাকটিক এসিড ত্বককে পরিষ্কার করে এবং মৃত কোষ দূর করে ত্বক কে আরো দ্বিগুন মসৃণ করে তোলে।
💡 ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ
নিয়মিত নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় দই খেলে দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে। খাবারের সাথে দই খাওয়া হলে তা দেহের চর্বি কমে এবং সার্বিকভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।
💡 যোনি সংক্রমণ থেকে রক্ষাঃ
মেয়েদের জন্য দই আরো বেশী উপকারী। দইয়ে রয়েছে লাক্টিলবাসিলাস আসিডফিলাস। এ ব্যাক্টেরিয়া আমাদের খাদ্য খাজা চিনির সাথে প্রতিক্রিয়া করে আর হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড তৈরি করে যা যোনির ছত্রাক সংক্রমণ দূর করে থাকে।
💡 উপকারী ব্যাক্টেরিয়াঃ
দইয়ে রয়েছে অসংখ্য উপকারী ব্যাক্টেরিয়া । যা দেহের কোন প্রকার ক্ষতি করে না এবং আরো হজম এ সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তোলে ।

➡ দই বানানোর সহজ উপায়- মিষ্টি ও টক দই
ভোজনপ্রিয় বাঙালীর বাড়ীর ফ্রিজে দই থাকবে না তা কোনো দিন হয় ? আমরা কব্জি ডুবিয়ে খাবারের পর দই এর খোঁজ করি, বিশেষত মিষ্টি দই। স্বাস্থ্যের জন্য উপকারের পাশাপাশি এটি খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এই সুন্দর জিনিসটি বাড়ীতেই জমিয়ে ফেলতে পারেন যা একদম দোকান এর মতো সুস্বাদু হবে। চলুন তাহলে দেখে নিই মিষ্টি ও টক দই বানানোর সহজ উপায়।
💡 দই বানানোর সহজ উপায়ঃ
➡ প্রয়ােজনীয় উপকরণঃ
- ১ লিটার মতো দুধ।
- জল দুধের প্রায় – হাফ লিটার।
- চিনি ২০০ গ্রাম।
- দইয়ের বীজ (পুরোনো দই ) দুই টেবিল চামচ মতো।
- ২/৩ টেবিল চামচ পাউডার দুধ দিতে পারেন।
- ১ টি মাটির পাত্র-এতে দই ভালো জমে।
➡ প্রস্তুত প্রণালীঃ
💡 আগে দইয়ের বীজ (পুরোনো দই ) তৈরি করে নিন। এটি দুভাবে নেওয়া যায়।।
১) আগের দই যেটি সামান্য টকিয়ে গেছে, সেখান থেকে ২ টেবিল চামচ সরিয়ে রাখুন।
২) এক কাপ দুধে এক কাপ পরিমাণ গুঁড়াে দুধ দিয়ে ভালাে করে ফুটিয়ে ক্ষীর তৈরি করে নিন।এটিই দইয়ের বীজ হিসেবে কাজ করবে।
💡 দইয়ের বীজ বানিয়ে নেওয়ার পর দুধ ও দুধ পাওডার ও সামান্য জল একটি ভারী পাত্রে নিয়ে অল্প আঁচে জ্বালতে থাকুন। এইভাবে জ্বালতে জ্বলতে যখন আগের থেকে অর্ধেক পরিমাণে হয়ে যাবে তখন এই পাক দেওয়া দুধে ২০০গ্রাম মতো চিনি দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। লক্ষ রাখুন দুধ যেন পাতলের নিচে লেগে না যায়। দুধে এইভাবে আরও ঘন হয়ে এলে উনুন থেকে নামিয়ে কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা করে নিন।
একটু গরম থাকতেই এবার দুধে দইয়ের বীজ (পুরনো দই ) যা আপনি আগে বানিয়েছেন তা দিয়ে ভালো করে নাড়িয়ে মিশিয়ে নিন। মেশানোর সময় খেয়াল রাখুন যেন বেশি ফেনা না উঠে এরপর মাটির পাত্রে ঢেলে মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে অন্ধকার ও ঠাণ্ডা জায়গায়( ফ্রিজ থাকলে ফ্রিজে )প্রায় ৮-১০ ঘন্টা মতো রাখুন। ৮- ১০ ঘণ্টার মধ্যে জমে যাবে। এবার পরিবেশন করে ফেলুন দোকানের মতো সুস্বাদু ঘরে জমানো পারফেক্ট ‘মিষ্টি দই’।
আরও দেখুনঃ খাদ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত আর্টিকেল